অ্যান্টার্কটিকা
Template:সম্পর্কে Template:Infobox continent অ্যান্টার্কটিকা হল পৃথিবীর সর্বদক্ষিণে অবস্থিত মহাদেশ। ভৌগোলিক দক্ষিণ মেরু এই মহাদেশের অন্তর্গত। দক্ষিণ গোলার্ধের অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলে প্রায় সামগ্রিকভাবেই কুমেরু বৃত্তের দক্ষিণে অবস্থিত এই মহাদেশটি দক্ষিণ মহাসাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত। Template:রূপান্তর আয়তন-বিশিষ্ট অ্যান্টার্কটিকা পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ এবং আয়তনে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের প্রায় দ্বিগুণ। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশটি এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সর্বনিম্ন জনবসতিপূর্ণ মহাদেশ। এই মহাদেশের জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ০.০০০০৮ জন। অ্যান্টার্কটিকার ৯৮% অঞ্চল গড়ে Template:রূপান্তর পুরু বরফে আবৃত।[1] অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত অংশগুলি বাদ দিয়ে সর্বত্রই এই বরফের আস্তরণ প্রসারিত।
সামগ্রিকভাবে অ্যান্টার্কটিকা হল পৃথিবীর শীতলতম, শুষ্কতম এবং সর্বাধিক ঝটিকাপূর্ণ মহাদেশ। বিশ্বের সকল মহাদেশের মধ্যে এই মহাদেশটির গড় উচ্চতা সর্বাধিক।[2] অ্যান্টার্কটিকার অধিকাংশ অঞ্চলই একটি মেরু মরুভূমির । এই মহাদেশের উপকূলভাগে এবং উপকূল-সমীপস্থ অঞ্চলগুলিতে বার্ষিক পরিচলন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ Template:রূপান্তর।[3] পৃথিবির ৮০% মিঠা পানি এখানে বরফ হিসেবে জমা আছে। অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা −৮৯.২° সেন্টিগ্রেড (−১২৮.৬° ফারেনহাইট) পর্যন্ত (অথবা মহাকাশ থেকে পরিমাপকৃত হিসাব অনুযায়ী, −৯৭.৭° সেন্টিগ্রেড অর্থাৎ −১৩৫.৮° ফারেনহাইট পর্যন্ত) নামতে পারে।[4] যদিও মহাদেশের তিন-চতুর্থাংশ অঞ্চলের (বছরের শীতলতম অংশ) গড় তাপমাত্রা −৬৩° সেন্টিগ্রেড (−৮১° ফারেনহাইট)। সমগ্র মহাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গবেষণা কেন্দ্রগুলিতে সারা বছরই ১,০০০ থেকে ৫,০০০ লোক বসবাস করে। এখানকার স্থানীয় জীবজগতের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, উদ্ভিদ, প্রোটিস্ট এবং মাইট, নেমাটোডা, পেঙ্গুইন, সিল ও টারডিগ্রেড বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর নাম উল্লেখযোগ্য। অ্যান্টার্কটিকার তুন্দ্রা অঞ্চলে গাছপালা দেখা যায়।
বিশ্বের নথিবদ্ধ ইতিহাসে অ্যান্টার্কটিকাই হল সর্বশেষ আবিষ্কৃত অঞ্চল। ১৮২০ সালে ভস্তক ও মার্নি নামে দুই রুশ রণতরীর অভিযাত্রী ফেবিয়ান গোটলিয়েব ফন বেলিংশসেন ও মিখাইল লাজারেভ কর্তৃক ফিমবুল তুষার সোপান আবিষ্কারের পূর্বে এই মহাদেশটির অস্তিত্বের কথা কেউই জানত না। অবশ্য ঊনবিংশ শতাব্দীর পরবর্তী পর্যায়েও প্রতিকূল পরিবেশ, সহজলভ্য প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব ও দুর্গমতার কারণে এই মহাদেশটি মোটামুটি উপেক্ষিতই ছিল। ১৮৯৫ সালে নরওয়েজীয় অভিযাত্রীদের একটি দলই প্রথম এই মহাদেশে অবতরণ করে বলে নিশ্চিতভাবে জানা যায়।
অ্যান্টার্কটিকা চুক্তি অনুযায়ী ‘কনসাল্টিং’ মর্যাদাপ্রাপ্ত পক্ষগুলির দ্বারা এই মহাদেশ শাসিত হয়। ১৯৫৯ সালে বারোটি দেশ এবং তারপর আরও আটত্রিশটি দেশ এই চুক্তিতে সাক্ষর করেছিল। এই চুক্তির দ্বারা অ্যান্টার্কটিকায় সামরিক কার্যকলাপ, খনিজ উত্তোলন, পারমাণবিক বিস্ফোরণ ও পারমাণবিক বর্জ্য নিক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণার পৃষ্ঠপোষকতা করা হয় এবং সমগ্র মহাদেশের জৈব-ভৌগোলিক ক্ষেত্রটি রক্ষা করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের ১০০০ - ৫০০০ বৈজ্ঞানিক এই মহাদেশে গবেষণায় রত।
নাম-ব্যুৎপত্তি
[edit]
থাম্ব|ফাবিয়ান গটলিব ফন বেলিংসহাউজেনের নেতৃত্বে প্রথম রুশ অ্যান্টার্কটিক অভিযান ১৮১৯ - ১৮২১ অ্যান্টার্কটিকা নামটি প্রকৃতপক্ষে গ্রিক যৌগিক শব্দ আন্তার্কতিকে-এর (গ্রিক: ἀνταρκτική) রোমান রূপ। এই শব্দটি গ্রিক আন্তার্কতিকোস (গ্রিক: ἀνταρκτικός) শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গবাচক প্রতিশব্দ,[5] যার অর্থ "আর্কটিকের বিপরীত" বা "উত্তরের বিপরীত"।[6]
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ অব্দ নাগাদ অ্যারিস্টটল তাঁর মেতেওরোলজিকা গ্রন্থে একটি অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের কথা উল্লেখ করেন।[7] কথিত আছে, খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে তিরের মারিনোস তাঁর অসংরক্ষিত বিশ্ব মানচিত্রে এই নামটি ব্যবহার করেছিলেন। রোমান লেখক হাইজিনাস ও এপুলিয়াস (খ্রিস্টীয় প্রথম-দ্বিতীয় শতাব্দী) দক্ষিণ মেরু অর্থে রোমানীকৃত গ্রিক পোলাস আন্তার্কতিকাস (লাতিন: polus antarcticus) নামটিকে গ্রহণ করেন।[8][9] এই নামটি থেকে ১২৭০ সালে প্রাচীন ফরাসি পোলে আন্তার্তিকে (প্রাচীন ফরাসি: pole antartike; আধুনিক ফরাসি ভাষায়: pôle antarctique) নামটির উদ্ভব ঘটে। এই ফরাসি শব্দটি থেকে ১৩৯১ সালে জিওফ্রে চসার একটি পরিভাষাগত সনদে মধ্য ইংরেজি পোল আন্টার্কটিক (মধ্য ইংরেজি বানান: pol antartik; বর্তমান ইংরেজি বানান: Antarctic Pole) নামটি গ্রহণ করেন।[10]
বর্তমান ভৌগোলিক নামটি অর্জনের আগে এই শব্দটি "উত্তরের বিপরীত" অর্থে একাধিক স্থানের নাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ষোড়শ শতাব্দীতে ব্রাজিলে স্থাপিত স্বল্পকাল স্থায়ী ফরাসি উপনিবেশটিকে বলা হত "ফ্রান্স আন্তার্কতিকে"।
১৮৯০-এর দশকে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে একটি মহাদেশের নাম হিসাবে "অ্যান্টার্কটিকা" শব্দটি ব্যবহৃত হয়। স্কটিশ মানচিত্রাঙ্কনবিদ জন জর্জ বার্থেলোমিউকে এই নামকরণের হোতা বলে মনে করা হয়।[11]
আবিষ্কারের ইতিহাস
[edit]Template:মূল নিবন্ধ Template:আরও দেখুন

অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের কোন স্থায়ী অধিবাসী নেই এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত কোন মানুষ এই স্থানকে দেখেছিলেন বলে কোন প্রমাণ নেই। এতৎসত্ত্বেও প্রথম শতাব্দী থেকেই একটি বিশ্বাস প্রচলিত ছিল যে, পৃথিবীর দক্ষিণে টেরা অস্ট্রালিস নামক এক বিশাল মহাদেশ উপস্থিত থাকতে পারে। টলেমি মনে করতেন যে, ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকা নিয়ে গঠিত তৎকালীন যুগে পরিচিত পৃথিবীর ভূমিসমষ্টির সামঞ্জস্য রক্ষার জন্য এই মহাদেশ দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। এমনকি সপ্তদশ শতাব্দীর শেষার্ধে অভিযাত্রীরা দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কারের পর যখন জানা যায়, এই দুইটি মহাদেশ প্রবাদ হিসেবে প্রচলিত অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের অংশ নয়, তখনও ভৌগোলিকরা বাস্তবের থেকে দ্বিগুণ আকারের মহাদেশের অস্তিত্বের কথা বিশ্বাস করতেন।অ্যান্টার্কটিকার প্রবাদের সঙ্গে প্রচলিত হলেও অস্ট্রেলিয়াকে টেরা অস্ট্রালিস নামটি দেওয়া। কারণ, তখন ভুল ধারণা ছিল যে অস্ট্রেলিয়ার পর দক্ষিণে আর কোনো মহাদেশ নেই।
অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কারের পর অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের নামকরণ টেরা অস্ট্রালিস শব্দটি থেকে করা হয়, কারণ তখন ম্যাথিউ ফ্লিন্ডার্স নামক অভিযাত্রী সহ বেশ কিছু মানুষ মনে করতেন অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণে উল্লেখযোগ্য মাপের কোন মহাদেশ পাওয়া সম্ভব নয়।[পা 1]
অ্যান্টার্কটিকা চুক্তি
[edit]১৯৫৯ সালে ১২টি দেশের মধ্যে অ্যান্টার্কটিকা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়; যাতে বর্তমানে ৪৬টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এ চুক্তির মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকায় সামরিক কর্মকাণ্ড এবং খনিজ সম্পদ খনন নিষিদ্ধ, বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে সহায়তা এবং মহাদেশটির ইকোজোন সুরক্ষিত করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের ১০০০ - ৫০০০ বিজ্ঞানী অ্যান্টার্কটিকায় বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন।[13]
পাদটীকা
[edit]তথ্যসূত্র
[edit]বহিঃসংযোগ
[edit]Find more about অ্যান্টার্কটিকা at Wikipedia's sister projects | |
![]() | Definitions and translations from Wiktionary |
![]() | Media from Commons |
![]() | Learning resources from Wikiversity |
![]() | News stories from Wikinews |
![]() | Quotations from Wikiquote |
![]() | Source texts from Wikisource |
![]() | Textbooks from Wikibooks |
![]() | Travel guide from Wikivoyage |
- অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চল
- অ্যান্টার্কটিকা
- http://www.ats.aq/
- ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিকা সার্ভে
- যুক্তরাষ্ট্র অ্যান্টার্কটিকা প্রোগ্রাম
- অস্ট্রেলিয়া অ্যান্টার্কটিকা সার্ভে
- দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় অ্যান্টার্কটিকা প্রোগ্রাম

Wikimedia Commons has media related to:
অ্যান্টার্কটিকা
Template:কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ Template:ভূগোল-অসম্পূর্ণ
Template:Antarctica Template:বিশ্বের মহাদেশসমূহ Template:মরুভূমি
বিষয়শ্রেণী:অ্যান্টার্কটিক অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:মহাদেশ বিষয়শ্রেণী:অসামরিকীকৃত অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:পৃথিবীর চরম বিন্দু বিষয়শ্রেণী:পৃথিবীর মেরু অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:ভিডিও ক্লিপ সংবলিত নিবন্ধ
- ↑ Template:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ Template:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ Template:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ Template:সংবাদ উদ্ধৃতি
- ↑ Template:বই উদ্ধৃতি
- ↑ Template:বই উদ্ধৃতি
- ↑ Aristotle Meteorologica. Book II, Part 5. 350 BCE. Translated by E. Webster. Oxford: Clarendon Press, 1923. 140 pp.
- ↑ Hyginus. De astronomia. Ed. G. Viré. Stuttgart: Teubner, 1992. 176 pp.
- ↑ Apuleii. Opera omnia. Volumen tertium. London: Valpy, 1825. 544 pp.
- ↑ G. Chaucer. A Treatise on the Astrolabe. Approx. 1391. Ed. W. Skeat. London: N. Trübner, 1872. 188 pp.
- ↑ John George Bartholomew and the naming of Antarctica, CAIRT Issue 13, National Library of Scotland, July 2008, ISSN 1477-4186, and also Template:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ Flinders, Matthew. A voyage to Terra Australis (Introduction). Retrieved 25 January 2013.
- ↑ Template:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ There is no probability, that any other detached body of land, of nearly equal extent, will ever be found in a more southern latitude; the name Terra Australis will, therefore, remain descriptive of the geographical importance of this country and of its situation on the globe: it has antiquity to recommend it; and, having no reference to either of the two claiming nations, appears to be less objectionable than any other which could have been selected.[12]Cite error:
<ref>
tags exist for a group named "পা", but no corresponding<references group="পা"/>
tag was found